Friday, March 21, 2014

সালাফীদের ভ্রান্ত আক্বীদা - পর্ব - ১

Source : FB Profile Link ===>> https://www.facebook.com/AskSumon

(যারা ভাল সাজতে বলবেন যে, এই সকল বিষয় নিয়ে নেটে কথা বলা উচিত নয়, তারা আগে নেট ঘুরে দেখুন। আমরা আলোচনা করছি না, নেটে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তাদের বিভ্রান্তিগুলো মানুষকে দেখিয়ে দিচ্ছি মাত্র)


***আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর আক্বীদা হল . . .
যারা আল্লাহ তায়ালার হাত, চেহারা ইত্যাদি দ্বারা আল্লাহর অঙ্গ বা অংশ আছে বলে বিশ্বাস করে তারা সুস্পষ্ট কুফুরী করে। আল্লাহ তায়ালা অঙ্গ-প্রতঙ্গ থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। তিনি অংশ থেকে পবিত্র।

আমাদের দলীল-

(সূরা শুরার ১১ নং আয়াত ও সূরা ইখলাস আমাদের দলিল। সংক্ষিপ্ত কথা হলো, বিভিন্ন অঙ্গ বা অংশ মিলিত হয়ে যে অস্তিত্ব লাভ করে সে মুরাক্কাব বা যৌগিক। আমরা আল্লাহ তায়ালাকে একক বলে বিশ্বাস করি। তার কোন অংশ নেই, তার সমতুল্য কিছু নেই। বিভিন্ন অংশ বা অঙ্গ নিয়ে যে যৌগিক গঠন হয়, সেটি মাখলুক বা সৃষ্ট। এধরনের যৌগিক সত্বা আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদের ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত।

***অথচ আহলে হাদীস/সালাফীরা বলে যে,
আল্লাহ তা‘আলার আকার আছে, তিনি নিরাকার নন। তিনি শুনেন, দেখেন এবং তাঁর হাত, পা, চেহারা, চোখ ইত্যাদি আছে।

***আচ্ছা ভাইরা আপনার এই কথাগুলোর জবাব দিন দেখি . . .

১.

সূরা কাসাসের ৮৮ নংআয়াতের অংশ বিশেষের প্রতিএকটু খেয়াল করুন- 

لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهُ 
এখানে শাব্দিক অর্থ করলে অর্থটা হয় এরকম- "তিনি (আল্লাহ) ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তাঁর চেহারা ব্যতিত সবকিছুই ধ্বংস হবে।" এখন যদি বলা হয় আল্লাহর হাত, চোখ, চেহারা ইত্যাদি আছে তাহলে এই আয়াতের অর্থ কী এরকম দাঁড়ায় না যে- আল্লাহ তাআলার হাত পা ইত্যাদি সবকিছই ধ্বংস হবে শুধু তাঁর চেহারা ব্যতিত (নাউযুবিল্লাহ)।

২.

পবিত্র কুরআনে আল্লাহর এক হাতের কথা আসছে 

يد الله فوق أييديهم 
(আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর),
দুই হাতের কথা 

قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ ۖ
এখানে দুই হাতের কথা আছে।
সূরা ইয়াসীনে রয়েছে, 

أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُمْ مِمَّا عَمِلَتْ أَيْدِينَا أَنْعَامًا فَهُمْ لَهَا مَالِكُونَ 
এখানে তিন থেকে অসংখ্য হাতের কথা রযেছে। এবার আপনি বলুন আল্লাহ হাত কতগুলো?

৩.

ইমাম আবু হানিফা রহ. বলেন, 

يدالله فوق أيديهم و ليست كأيدي خلقه و ليست بجارحة 
অর্থ: //আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর, আল্লাহর হাত তার সৃষ্টির হাতের মতো নয়। আল্লাহর হাত কোন অঙ্গ নয়// সূত্র: আল-ফিকহুল আবসাত।
ইমাম আবু হানিফা রহ. আল -ফিকহুল আকবারে বলেছেন, //আল্লাহর হাত আল্লাহর একটি গুণ।// সুতরাং আল্লাহর হাত দ্বারা ইমাম আবু হানিফা রহ. আল্লাহর একটি বিশেষ গুণ উদ্দেশ্য নিয়েছেন। এটি আল্লাহর কোন অঙ্গ বা অংশ নয। আপনার ইলম আপনার গুণ, আপনার হাত আপনার কোন গুণ নয়। সুতরাং আল্লাহর হাতের ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানিফা রহ. হাতের প্রচলিত অর্থ উদ্দেশ্য নেননি বরং এটিকে আল্লাহর বিশেষ গুণ সাব্যস্ত করেছেন। ইমাম আবু হানিফা রহ. এর বক্তব্য লক্ষ্য করুন, //আল্লাহর হাত কোন অঙ্গ নয়//

৪.
" আল ফিকহুল আকবর " কিতাবের হাওয়ালা দিতে অনেককেই দেখি। আসুন দেখি ওখানে কি বলা আছে -

وله يد ووجه ونفس فما ذكره الله تعالى في القرآن من ذكر الوجه واليد والنفس فهو له صفات بلا كيف ولا يقال إن يده قدرته او نعمته لأن فيه إبطال الصفة وهو قول أهل القدر والاعتزال ولكن يده صفته بلا كيف وغضبه ورضاه صفتان من صفاته بلا كيف

আল্লাহ্ তাআলার হাত, চেহারা ও নফস রয়েছে। আল্লাহ তাআলা কোরআনে চেহারা, হাত ও নফস সম্পর্কে যাই উল্লেখ করেছেন, সেগুলো তাঁর এমন গুন, যা “বিলা কাইফ” (অর্থাৎ যার প্রকৃত অবস্থা আল্লাহই ভাল জানেন)।

এখানে একথা বলা যাবে না যে, তাঁর হাত দ্বারা তাঁর কুদরত বা নেয়ামত উদ্দেশ্য। কেননা এতে করে আল্লাহ্‌র গুনাবলিকে অস্বীকার করা হয়। যা মূলত আহলুল কদর ও মুতাযিলাদের মত।

বরং আল্লাহ্‌র হাত তাঁর একটি গুন। এবং আল্লাহ্‌র রাগ ও সন্তুষ্টিও তাঁর গুণাবলির মধ্য থেকে দুটি গুন। যা “ বিলা কাইফ” (অর্থাৎ যার প্রকৃত অবস্থা আল্লাহই ভাল জানেন)

(স্পষ্ট ভাষায় আল-ফিকহুল আকবারে আল্লাহ্‌র রাগ ও সন্তুষ্টির মত তাঁর হাত, চোখ, চেহারাকেও গুন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিতাবটির প্রথম পৃষ্ঠা ও উল্লেখিত অংশের স্ক্রিনশট পরবর্তী কমেন্টে দেখে নিতে পারেন।)

(আজকে প্রথম পর্ব সমাপ্ত)

( Ijharul Islam Al-kawsary )   LINK

No comments:

Post a Comment