Friday, March 18, 2016

আরব আলেমদের দৃষ্টিতে শায়েখ নাসীরুদ্দীন আলবানী কেমন ছিলেন?


আরব আলেমদের দৃষ্টিতে শায়েখ নাসীরুদ্দীন আলবানী কেমন ছিলেন?


------------------ মুফতী রফীকুল ইসলাম মাদানী



আরব বিশ্বে ও বর্তমান দুনিয়ায় কথিত আহলে হাদীস মতবাদ বিস্তারের রূপকার শায়খ নাছীরুদ্দীন আলবানী (মৃত ১৯৯৯ ইং)। রাসূল (সা.) এর হাদীসকে বিকৃত করে মুসলমানদেরকে বিভক্ত করার মূল নায়ক তিনি। তিনিই সহীহ হাদীসকে যয়ীফ, আর যয়ীফ হাদীসকে সহীহ বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার মূলমন্ত্র শিখিয়েছেন কথিত আহলে হাদীসদেরকে। চির মীমাংসিত বিষয়ে উস্কানীমূলক বক্তব্যের তিনিই সূচনা করেছেন। শিক্ষা দিয়েছেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় আকাবিরগণের প্রতি বেআদবীমূলক আচরণ। হানাফী মাযহাবের দলীল হিসেবে কোনো হাদীস পাওয়া মাত্রই মনগড়া যুক্তি তর্কের মাধ্যমে দুর্বল হাদীসের তালিকায় ফেলে দেয়াই তার প্রধান পেশা। তার জীবনী শীর্ষক কয়েক খন্ডে বই প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু কার নিকট তিনি পড়ালেখা করেছেন এর কোন বিবরণ কোথাও উল্লেখ নেই। মদীনা ইউনিভার্সিটির উস্তাদ ড.আনিস তাহের ইন্দোনেশী আমাদের ক্লাসে আলবানীর জীবনী শীর্ষক দু’সপ্তাহ ব্যাপী আলোচনা পেশ করেছেন , এতেও তিনি শায়খ আলবানীর শিক্ষা ডিগ্রি বিষয়ক কিছুই বলতে পারেন নি। আমরা তার জীবনী গ্রন্থে যা পেয়েছি, তারই লিখিত বই “সিফাতুসসালাত” এবং “সালাতুত তারাবীহ” গ্রন্থ দু’টির অনুবাদক আলবানীর জীবনীতে লিখেন, তিনি তার পিতার পেশা, ঘড়ি মেরামতের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।” অতএব কোনো মাদরাসায় ভর্তি হয়ে তার পড়া লেখার সুযোগ কোথায়? কোথায় তার এ সময়? তবে আমাদের উস্তাদ ড.আনিস সাহেব বলেছেন যে, শায়খ আলবানী নিজে নিজে প্রচুর অধ্যয়ন, গবেষণা করতেন। অবশ্য আমরা জানি যারা নিজে নিজে গবেষণায় অবতীর্ণ হয়, তারাই পথভ্রষ্ট হয়, হয় তাদের মাধ্যমে জনগণ বিভ্রান্ত। এধরনের পথভ্রষ্ট বিদ্যানগণের তালিকা এ জগতে বিস্তর লম্বা, কাহিনী তাদের অনেক হৃদয় বিদারক। মনগড়া মতবাদ ছড়িয়ে হঠাৎ আজগবী চমক সৃষ্টি করাই হয় তাদের মূল টার্গেট। তাইতো শায়খ আলবানীর গবেষণায় অজ্ঞতা, বাড়াবাড়ি, দুর্বলতা, ভুলভ্রান্তি, স্ববিরোধিতা ও কল্পনাপ্রসূত মনগড়া মতবাদে ভরপুর। এ সবের বিশাল সূচী আজ ইতিহাসের পাতায় স্থান পেয়েছে। আর রচিত হচ্ছে তার অমার্জিত ভুলত্রুটির দাস্তান শীর্ষক অসংখ্য বই পুস্তক। এ পরিসরে আরব অনারবের অনুস্মরণীয় কয়েক জনের মতামত অতি সংক্ষেপে উপস্থাপনের প্রয়াস পাবো।
আরবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, অসংখ্য গ্রন্থের নির্ভরযোগ্য গবেষক, আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা তাঁর রচিত “আসারুল হাদীস” নামক কিতাবের ৫১নং পৃষ্ঠায় লিখেন-
مع ان هذا الرجل ليس له من الشيوخ إلا شيخ واحد من علماء حلب بالإجازة لا بالتلقى والأخذ والمصاحبة والملازمة
এছাড়া এই ব্যক্তির তো কোন শিক্ষক নেই। সিরিয়ার হালবের জনৈক ব্যক্তি তাকে হাদীস চর্চার মাত্র অনুমতি দিয়েছেন। তবে তার কাছেও আলবানী নিয়মিতভাবে পড়া লেখা করেননি। বিশ্ব বরেণ্য মুহাদ্দিস মাও.হাবীবুর রহমান আ’যমী (রহ.) তাঁর গ্রন্থ
 الأبانى شذوذه وأخطاؤه (শায়খ আলবানীর ভুলভ্রান্তি ও বিচিত্র মতবাদের দাস্তান) এর ভূমিকায় লিখেন-

والله لا يعرف ما يعرف آحاد الطلبة الذين يشتغلون بدراسة الحديث فى عامة مدارسنا
আল্লাহর কসম! সেই শায়খ আলবানী হাদীস সম্পর্কে এতটুকু জ্ঞানও রাখেনা, যা আমাদের সাধারণ মাদরাসাগুলোতে অধ্যয়নরত ছাত্ররা জানে। অতঃপর আ’যমী (রহ.) উক্ত কিতাবে তিন খন্ড ব্যাপী শায়খ আলবানীর জ্ঞানের পরিধি ও তার ভুলভ্রান্তি এবং বিচিত্র মতবাদের আশ্চর্য চিত্র উদ্ধৃতি সহকারে উপস্থাপন করেছেন।
এছাড়া শায়খ আলবানীর গবেষণা প্রায়ই বিরোধপূর্ণ ও সংঘর্ষমুখী হওয়ায় আরবের বিজ্ঞ উলামায়ে কিরামগণ তা চিহ্নিত করেছেন। স্বতন্ত্র বই পুস্তক লিখে এসব বিষয়ে মুসলমানদেরকে শায়খ আলবানীর গবেষণামূলক মতামত গ্রহণ করার প্রতি সতর্ক করেছেন।
আরবের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস শায়খ হাসান বিন আলী আস সাক্কাফ প্রণীত “তানাকুযাতুল আলবানী” বা আলবানীর গবেষণায় বিরোধপূর্ণ বর্ণনা শীর্ষক দুই খন্ডের বইটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। (দারুল ইমাম নববী ওমান থেকে প্রকাশিত।) এতে তিনি শায়খ আলবানীর অসংখ্য হাদীস তুলে ধরেছেন, যেসব হাদীসের ক্ষেত্রে শায়খ আলবানী তারই রচিত একেক কিতাবে একেক ধরনের মতামত পেশ করেছেন। 
একই হাদীসকে তিনি কোথাও সহীহ আবার কোথাও দুর্বল এজাতীয় স্ববিরোধী মতামত দেদারসে লিখে গেছেন। শায়খ হাসান তার উল্লেখিত দু' খন্ড  বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, শায়খ আলবানীর স্ববিরোধী মতামত ও ভুলত্রুটির ফিরিস্তি লেখকের নিকট হাজার হাজার জমা রয়েছে, যা পরবতীতে প্রকাশ করা হবে ইনশাআল্লাহ। এভাবে আরবের বিজ্ঞ আলেম শায়খ মাহমুদ সাঈদ মামদূহ প্রণীত ৬ ভলিয়মে লিখিত বিশাল কিতাব:
التعريف باوهام من قسم السنن الى صحيح وضعيف (যে সুনান-হাদীসের কিতাব সমূহকে সহীহ ও দুর্বল দু’ভাগ করেছেন তার ভুলভ্রান্তির পরিচয়)
শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে সিদ্দীক আল গুমারী কর্তৃক প্রণীত
القول المقنع فى الرد على الأبانى المبتدع (নতুন মতবাদের প্রবর্তক আলবানীর সন্তুষ্টজনক প্রতিউত্তর)
উস্তাদ বদরুদ্দীন হাসান দিয়াব দামেশকী প্রণীত
انوار المصابيح على ظلمات الأبانى فى صلاة التراويح (তারাবীর নামায প্রসঙ্গে আলবানীর ভ্রান্তি নির্বাপক আলোক রশ্মি)
শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায প্রণীত
أين يضع المصلى يده فى الصلاة بعد الرفع من الركوع (রুকু থেকে উঠার পর নামাযী আবার কোথায় হাত বাঁধবে?)
শায়খ ইসমাঈল বিন আনসারী প্রণীত 
تصحيح صلاة التراويح عشرين ركعة والرد على الأبانى فى تضعيفه(২০ রাকআত তারাবীর বিশুদ্ধ হাদীসকে আলবানী দুর্বল বলার প্রতি উত্তর)
শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ (রহ.) প্রণীত 
كلمات فى كشف اباطيل وافترائت
(আলবানীর বাতিল মতবাদ ও মিথ্যা অপবাদের উন্মোচনে কিছু কথা)

শায়খ হাসান সাক্কাফ প্রণীত
صحيح صفة صلاة النبى صلى الله عليه وسلم
(রাসূল সা. এর বিশুদ্ধ নামায পদ্ধতি )
শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ আদ দুবাইশ প্রণীত 
تنبيه القارئ على تقوية ما ضعفه الألبانى(আলবানী অভিহিত দুর্বল হাদীস শক্তিশালী হিসেবে সতর্ক সংকেত)
শায়খ আবু উমর হাই ইবনে সালেম আল হাই প্রণীত
النصيحة فى بيان الاحاديث التى تراجع عنها الالبانى فى الصحيحة(যে সব সহীহ হাদীসকে আলবানী দুর্বল বলে আখ্যায়িত করেছেন সেগুলোতে পুণর্বিবেচনার উপদেশ)
শায়খ ইবনে আব্দুল্লাহ আত তুয়াইজারী প্রণীত
التنبيهات على رسالة الابانى فى الصلاة (আলবানীর নামায বিষয়ক কিতাবের প্রতি সতর্কবাণী)
ডক্টর মুহাম্মদ সাঈদ রামাদান আল বুয়াইতী প্রণীত
الامذبية اخطر بدعة تهدد الشريعة الاسلامية (লা মাযহাবী মতবাদ মারাত্মক বিপদজনক বিদআতী দল ইসলামী শরীয়তের জন্য ভয়ঙ্কর হুমকি)
এবং শায়খ আতিয়্যা মুহাম্মদ সালিম প্রণীত
التراويح اكثر من الف عام
(এক হাজার বছরে তারাবীর ইতিহাস) প্রমুখ লেখকগণ তাদের রচনাবলীতে শায়খ আলবানীর ভুলভ্রান্তি ও স্ববিরোধী মতবাদের চিত্র তুলে ধরেছেন। দেখিয়ে দিয়েছেন হাতে কলমে ধরে ধরে, শায়খ আলবানীর বই ও পৃষ্ঠা নাম্বার চিহ্নিত করে। এতে করে পরিস্কারভাবে প্রমাণ হয় যে, হাদীস গবেষণার ক্ষেত্রে শায়খ আলবানীর কোনো নিয়মনীতি নেই। নেই এ বিষয়ে তার কোন গতিমতি। আছে শুধু তার মনগড়া তন্ত্রমন্ত্রআর উলামায়ে কিরামকে আক্রমণের হাতিয়ার। এছাড়া বিরোধিতা ও বাড়াবাড়ির বিদ্যায় তিনি সর্বোচ্চ ডিগ্রি প্রাপ্ত। হাদীস গবেষণার নামে যা করেছেন অধিকাংশই শুভংকরের ফাঁকি, বিচিত্র মতবাদ ছড়ানোর উপকরণ মাত্র।
আরবের বিশিষ্ট মুহাদ্দিস শায়খ মাহমুদ সাঈদ মামদূহ প্রণীত কিতাব
تنبيه المسلم إلى تعدى الألبانى على صحيح مسلم (সতর্ক হে মুসলিম! আলবানীর বাড়াবাড়ির জালে সহীহ মুসলিম)

এর ২০৬ নং পৃষ্ঠায় লিখেন-
قد وقفت على اوهام وأخطاء للألبانى وكفى تعدية على الصحيح
”আমি আলবানীর কাল্পনিক কর্মকান্ড ও ভুলত্রুটির ফিরিস্তি অবগত হয়েছি। বিশেষ করে সহীহ হাদীসের কিতাব প্রসঙ্গে বাড়াবাড়ির বিষয়টি তার কর্মকান্ডের পরিচয়ের জন্য

যথেষ্ট। 
উক্ত বইয়ের ২০৫নং পৃষ্ঠায় তিনি লিখেন,
أقول هذا بمناسبة عادة الألبانى مع مخالفيه، فإنه إذا وجد مخالفه قام وقعدو أرعد وتوعد، وإذا تصفحت كتبه تجد مصداق ذلك، فتراه يقول لأحدهم، أشل الله يدك وقطع لسانك، ويكاد أن يتهم صاحبا له بالشرك الأكبر، وثالثا يتهمه بلكذب، وأنه افاك كذاب، ثم نبزه بلقبه وقد جاء النص بالنهى عنه ورمى كثيرا من علماء المسلمين بالبدعة وما أعظمها من فرية، رغم إقراره أن الامام احمد يقول بقول المرمى بالبدعة!! ويتهم شهيد عصرنا بكفريات، ويتهم مالفا له بمكر خبث، نفاق، كذب، ضلال… الخ، والقائمة طويلة والألفاظ كثيرة ولا داعى لإعادتها
ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন, প্রসঙ্গত উল্লেখ করার প্রয়োজন মনেকরি। আলবানী যখনি কাউকে তার প্রতিপক্ষ বা ভিন্ন মতাদর্শের মনে করেন, তখন দেখতে পাবেন, তিনি বইয়ের পর বই আর পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা তাকে সমালোচনা করে লিখেই যাচ্ছেন। তার আক্রমণের স্বরূপ হিসেবে দেখবেন তিনি প্রথিতযশা বিজ্ঞ উলামায়ে কিরাম ও মহামনিষীদের ধ্বংস হওয়ার কামনা করেন, তাঁদেরকে মুশরিক, মিথ্যুক, প্রতারক, বিদআতী আখ্যায়িত করতে সামান্যতম কুণ্ঠাবোধ করেন না।
যুগশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিগণকে আলবানী প্রতিপক্ষ মনে করলে, তাঁদেরকে কাফির, চক্রান্তকারী, দুষ্টু, মুনাফিক, পথভ্রষ্ট ইত্যাদি অপবাদ দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না। এতে তার পাষাণ আত্মা তিলমাত্র কাঁপে না। তার ভয়ঙকর ন্যক্কারজনক কর্মকান্ডের শীর্ষ তালিকায় ইমাম আহমদ (রহ.) কেও বিদআতী বলে আখ্যায়িত করেছেন। এধরনের আচরণ তার দু’একটি ঘটনা নয়; বরং এসব বর্ণনা করে শেষ করার ওপারে।
এই কী একজন আলেমের ভাষা? রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও সাহাবাগণের আদর্শ কি মুসলমানদেরকে এমন শিক্ষাই দিয়েছে? একজন নায়েবে নবী, আরো একধাপ এগিয়ে তিনি একজন অপ্রতিদ্বন্ধী গবেষকের দাবিদার কথিত আহলে হাদীস মতবাদের ইমাম, তার মুখে এ ধরনের অশ্লীল আক্রমনাত্মক আচরণ অবশ্যই ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য লজ্জাজনক। যদিও তাদের নিজেদের লজ্জাবোধ হয় না। কারণ তাদের মতে বেআদবী মানেই বীর হওয়ার সমতুল্য। এভাবে মাসাইলগত বিষয়েও অনেক ক্ষেত্রে সমগ্র মুসলিম বিশ্বের মান্যবর উলামায়ে কিরাম এমনকি সৌদী আরবের উলামায়ে কিরামদেরকেও তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন পদে পদে। তাঁদের অবহেলার সুযোগে শায়খ আলবানী মতানৈক্য, বিভ্রান্তি ও উগ্রতার বীজ রোপে দিয়েছেন আরব মরুর রন্ধ্রে রন্ধ্রে। বাড়ি তার আলবানিয়ায়। পরে সিরিয়ায় হিজরত করেন। তার পিতা নূহ নাজাতী একজন আদর্শ মানব, হানাফী মাযহাবের শীর্ষ পর্যায়ের আলেম ছিলেন। ছেলের বিতর্কজনিত আচরণে পিতার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ত্যাজ্যপুত্র হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তিনি কোনোভাবে নাজাত লাভ করেন। আর জনগণ মুক্তি পায় শায়খ আলবানীকে সিরিয়া থেকে বাহির করে। আর শায়খ আলবানী চেপে বসে সৌদী জনতার ঘাড়ে। রাজতন্ত্রের ভয়ে আতঙ্কিত আলেম সমাজের মাঝে তার নতুন মতবাদ ছড়াতে আরো দারুন সুযোগ এসে যায়। তবে এক পর্যায়ে তাঁদের ঘুম ভাঙ্গে। সবাই সোচ্চার হয় তাঁদের দীর্ঘকালের শায়খ-আলবানীর বিরুদ্ধে।
১৯৯১ খৃস্টাব্দে সরকারী নির্দেশে শায়খ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পবিত্র আরবভূমি ছেড়ে জর্ডান যেয়ে আত্মরক্ষা পায়। আমরণ তিনি সেখানেই ছিলেন। আরবের সচেতন উলামায়ে কিরাম কিন্তু এক পর্যায়ে জেগে উঠেছিলেন, হয়েছিলেন প্রতিবাদ মুখর। (আল ইত্তেজাহাতুল হাদীসিয়্যা, শায়খ মাহমূদ সাঈদ মামদূহ)
উদাহরণ স্বরূপ শুধু একটি বিষয় লিখেই এ পরিসরের ইতি টানতে যাচ্ছি। কুরআন হাদীসে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত এবং মুসলিম বিশ্বের চির মীমাংসিত একটি বিষয় হলো, মহিলাদের মুখ মন্ডল  ঢেকে রাখা পর্দার অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু শায়খ আলবানী শুধু এ বিষয়ে একটি স্বতন্ত্র বই রচনা করেন। ঘোষণা দেন পর্দা হিসেবে মহিলারা তাদের মুখ মন্ডল  ঢাকতে হবে তা কুরআন হাদীসে মোটেও নেই। তবে আরবের উলামাগণ এ বিষয়ে নিরব থাকেন নি। শুধু এরই প্রতি উত্তরে প্রায় দু’ডজন বই লিখেছেন তাঁরা। তন্মধ্যে আরবের স্থায়ী ইফতা বোর্ডের সহসভাপতি শায়খ মুহাম্মদ ছালেহ ইবনে উসাইমীন লিখেছেন, “রিসালাতুল হিজাব ”শীর্ষক ছোট একটি বই। (মাকতাবাতুল মা’আরিফ, রিয়াদ থেকে প্রকাশিত) এতে তিনি আলকুরআনের ১০ টি আয়াত, পবিত্র হাদীস থেকে ১০ টি প্রমাণ এবং ১০ টি ক্বিয়াসের আলোকে প্রমাণ করেছেন যে, মহিলাদের মুখ মন্ডল  পর্দা হিসেবে ঢাকা ফরয। আর শায়খ আলবানী তো একটি প্রমাণও খুঁজে পাচ্ছেন না! এর রহস্য কী? কী তার মতলব? কোথায় তার টার্গেট? আশা করি সম্মানিত পাঠকগণই তা বিবেচনা করবেন।
বলাবাহুল্য বর্তমান বাংলাদেশেও কিছু লোক শায়খ আলবানীর জালে শিকার হচ্ছে। তারা শায়খ আলবানীর বাড়াবাড়ি, অশ্লীলতা, গোঁড়ামী, ভুলত্রুটির দাস্তান, বিচিত্র আদর্শ ও বিভ্রান্তিকর মতবাদকে পূঁজি করে গোটা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছে। অথচ শায়খ আলবানীর এসব বিচিত্র মতবাদের আইওয়াশ ও সিটিস্কেনের লক্ষ্যে শুধু সৌদী আরব থেকেই শতাধিক বই পুস্তক রচনা করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এসব ক্ষেত্রে আমাদের আহলে হাদীস ভাইয়েরা চোখ বন্ধ করে রাখে। আর লুফে নেয় শুধু তার বিচিত্র মতাদর্শ ও শিষ্টাচার বহির্ভূত দিকগুলো। তাইতো শায়খ আলবানীর শিষ্য ও অনুসারীগণ বাড়াবাড়ি ও অশ্লীলতায় আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে।
--------------------- Source LINK 

আলবানীঃ ঘড়ির মেকার + মুহাদ্দিস

No comments:

Post a Comment