Source LINK
ইসলামে বিবাহ সহজ, আর তালাক জায়েজ কিন্তু সহজ নয়...
----------------------------------------------------------------------
আল্লাহ্ মানুষের জন্যে বিবাহের পথকে সহজ করেছেন কিন্তু তালাকের বিষয়টি কঠিন শর্তাবলীর সাথে বেঁধে দিয়েছেন। বিয়ে করতে লাগে (১) প্রস্তাব (২) কবুল (৩) মাহর নির্ধারণ (৪) সাক্ষী।
আর তালাক দিতে ৬ ছয়টি ধাপ নিয়মতান্ত্রিক ভাবে অতিক্রম করতে হয় (যদিও এসব ক্ষেত্রে বিবিধ মতামত রয়েছে)ঃ
(ক) স্বামী স্ত্রীকে উপদেশ দেবেন।
(খ) উপদেশে কাজ না হলে বিছানা আলাদা করে দেবেন।
(গ) তাতেও কাজ না হলে সীমিত শারেরীক শাস্তি দেবেন। আল্লাহ্ বলেনঃ
وَاللاتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلا- النساء/34
স্ত্রীদের পক্ষ হতে যদি সম্পর্ক বিনষ্ট কারী আচরনের ভয় পাও তাহলে তাদেরকে উপদেশ দাও। অতঃপর বিছানা আলাদা করে দাও। অতঃপর (সীমিত) শারেরীক শাস্তি প্রদান করো। এ সবের পর যদি আনুগত্য প্রকাশ করে তাহলে অন্য কোন পথ অবলম্বন করবেনা-( আন্নিসা/৩৪)।
(ঘ) যদি আনুগত্য প্রকাশ না করে তাহলে দুই পক্ষের একজন করে মুরুব্বীর মাধ্যমে সুরাহার পথ বের করতে চেষ্টা করবে। আল্লাহ্ বলেনঃ
وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيدَا إِصْلاحًا يُوَفِّقِ اللَّهُ بَيْنَهُمَا – النساء/35
যদি ভয় করো যে বিভেদ রচিত হওয়ার উপকুলবর্তী হয়ে গেছো তাহলে উভয় পক্ষের একজন করে মুরুব্বীর মাধ্যমে সুরাহার করার চেষ্টা করবে। যদি তোমরা উভয়েই সুরাহা চাও তাহলে আল্লাহ্ তাওফিক দান করবেন-(আন্নিসা/৩৫)।
(ঙ) মুরুব্বীরা বিফল হয়ে গেলে স্বামী এক তালাক দিয়ে স্ত্রীর তিন-মাসিক পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।
وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلاَثَةَ قُرُوَءٍ- البقرة/229
তালাক প্রাপ্তা মহিলাগন তিন মাসিক পর্যন্ত অপেক্ষা করবে-( বাকারাহ/২২৯)।
চ) ১ম তালাকের পর তিন-মাসিকের মধ্যে স্ত্রীকে সাদরে ফিরিয়ে নিলে ভাল। আর যদি ফিরিয়ে না নেন তাহলে আরো এক তালাক প্রদান করবেন (২য় তালাক)। এবং পুনরায় তিন-মাসিক পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। উক্ত তিন মাসিকের মধ্যে স্বামী সাদরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিবেন এটাই কাম্য। তবে যদি ফিরিয়ে না-ই নেন তাহলে স্ত্রীকে তার সকল পাওনা বুঝে দিয়ে সসম্মানে বিদায় করবেন। এরই মাধ্যমে স্ত্রী বায়েন তালাক প্রাপ্ত হয়ে যাবেন।
এর পর যেটা রয়েছে তা কাম্য নয়। এক দিক থেকে তা ঘৃনিত, অন্য দিক থেকে মহিলার জন্যে অনিশ্চিতের দিকে চেয়ে কাল ক্ষেপণ করা। আর সেটা হোল এই যে, আরেক পুরুষ তাকে স্ত্রী হিসাবে বিবাহ করার পর যুক্তি সম্মত কারনে যদি উভয়ের মধ্যে বিভেদ হয়ে যায় তাহলে প্রথম স্বামী চাইলে পুনরায় বিবাহ করতে পারবেন। এটি ঘটনা পরম্পরায় সংগঠিত হয়, পুর্ব থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে করা যাবেনা।
الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَن يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا َ- البقرة
তালাক দুইবার। অতপর হয় রেখে দাওয়া না হয় সুন্দুর ভাবে ছেড়ে দেও। তোমাদের জন্যে বৈধ হবেনা যে যা স্ত্রীদেরকে প্রদান করেছো তা থেকে কিছু ফিরিয়ে নেবে যদিনা এমন অবস্থার কারনে তালাক হয় যে অবস্থায় উভয়ে মনে করে যে তারা বিবাহ সম্পর্কিত আল্লাহর আইন মানতে পারবেন না। আর এই অবস্থায় বিচ্ছেদে মাহর ছাড়া অতিরিক্ত কিছু দিয়ে থাকলে তা ফেরত নিতে পারবে। এটাই আল্লাহর দেওয়া আইন, এ আইনের সীমালঙ্ঘন করবেনা-(বাকারাহ/২২৯)।
বিবাহ সহজ কিন্তু তালাক সহজ নয়। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের কল্যানেই এমন নিয়ম বেধে দিয়েছে ইসলাম। উভয়ে মেনে চললে তালাক কমে যেত। দীর্ঘ দিন কাল-ক্ষেপণের মাধ্যমে বুঝে শুনে যে কাজ হয় তাতে সাধারণতই আফসোস হওয়ার কিছু বাকী থাকেনা। আল্লাহ্ বড়ই হাকীম। ইসলামের আইন খুবই বিজ্ঞান সম্মত।
Divorce |
Talaq - Divorce |
Muslima |
খোলা তালাক |
No comments:
Post a Comment