Monday, November 10, 2014

প্রশ্ন: নৌকা, লঞ্চ কিংবা বিমানে কীভাবে সালাত আদায় করবে?

Source LINK
প্রশ্ন: নৌকা, লঞ্চ কিংবা বিমানে কীভাবে সালাত আদায় করবে?

উত্তর: নৌকা লঞ্চ-স্টিমার কিংবা বিমানে যেভাবে মুসল্লির জন্য সহজ হয় সেভাবে সালাত আদায় করতে পারবে। তা মাকরূহ হবে না। কারণ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পানির জাহাজে সালাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছেন, “তুমি তাতে দাঁড়িয়ে সালাত আদা করো, তবে যদি ডুবে যাওয়ার ভয় কর তাহলে ভিন্ন কথা”। দারা-কুতনী ও হাকিম বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী তা চয়ন করেছেন।
বিমানে সালাত আদায়ের বিবিধ অবস্থা:
============================
বিমানে সালাত আদায় দু’ প্রকার: নফল সালাত ও ফরয সালাত।
ক) যদি সে সালাতটি হয় নফল, তবে:
---------------------------------------
আরোহী যেভাবে যে অবস্থায় আছে সেভাবে সে অবস্থায় আদায় করতে পারবে। রুকু ও সাজদা ইঙ্গিত করে আদায় করতে পারবে, সেটা যেদিকেই ফিরে থাকুক না কেন। কিবলার দিকে মুখ করে থাকা শর্ত নয়। অনুরূপ বিধান গাড়ীতে থাকার ব্যপারেও প্রযোজ্য। কারণ আমের ইবন রাবী‘আহ বর্ণিত হাদীসে এসেছে, “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার বাহনের উপর যেদিকেই বাহন ফিরছে সেদিকেই সালাত আদায় করতে দেখেছি”। [বুখার ও মুসলিম]
আর বুখারীর বর্ণনায় অতিরিক্ত এসেছে,
“তিনি (রুকু ও সাজাদার সময়) তার মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করেছেন, কিন্তু তিনি ফরয সালাতের ক্ষেত্রে তা করতেন না”।
আর মুসলিমের বর্ণনায় অতিরিক্ত এসেছে,
“তিনি বাহনের উপর ওয়িতর সালাতও আদায় করেছেন”।
তবে উত্তম হচ্ছে তাকবীরে তাহরীমার সময় কিবলামুখী হয়ে তা করা।
খ) কিন্তু যদি সালাতটি হয় ফরয কোনো সালাত, তখন তার চারটি অবস্থা থাকতে পারে:
----------------------------------------------------------------------------------------------
এক. যদি বিমানের আরোহনের পূর্বে বা বিমান থেকে নামার পরে সে ফরয সালাতটিকে তার নির্দিষ্ট ওয়াক্তে বা জমা তাকদীম অগ্রীম আদায় করে বা জমা তা‘খীর বা পিছিয়ে পড়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে তবে তাকে সেভাবেই আদায় করতে হবে।
দুই. যদি সময় হওয়ার পূর্বেই বিমানে প্রবেশ করে ফেলে, এবং যদি সালাতটি এমন হয় যা পরবর্তী সালাতের সাথে জমা করে আদায় করা সম্ভব, আর তার অধিক ধারণা হয় যে বিমান প্রথম সালাতটির ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পরেই কেবল ভূমিতে অবতরণ করবে, তখন আরোহীর উচিত হবে জমা তা‘খীর বা পিছিয়ে নিয়ে জমা করার নিয়্যত করা। যেমন যোহরকে আসরের সময়ে পিছিয়ে নিয়ে জমা করে আদায় করা, অনুরূপভাবে মাগরিবকে ইশার সময়ে পিছিয়ে নিয়ে জমা করে আদায় করা।
তিন. আর যদি সময় হওয়ার পূর্বেই বিমানে উঠে পড়ে, আর তার প্রবল ধারনা হয় যে দু’ সালাত জমা করা যায় এমন সালাতের পুরো সময় চলে যাওয়ার পর কিংবা সালাতটি যদি এমন হয় যা পরবর্তী সালাতের সাথে জমা করা যায় না যেমন ফজরের সালাত, তাহলে তার উপর ওয়াজিব হবে বিমানের সালাত আদায়ের স্থান যদি পাওয়া যায় তাতে তা আদায় করা যদি তা করতে সম্ভব হয়, যদি না পাওয়া যায় তো চলাচল পথে, যদি তাও সম্ভব না হয় তবে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে কিন্তু রুকু ও সাজদা তার চেয়ারে বসা অবস্থায় ইঙ্গিত করে আদায় করবে। কোনোভাবেই সালাতের সময় চলে যাওয়া পর্যন্ত দেরী করা তার জন্য বৈধ হবে না।
চার. যদি বিমানে সালাত আাদায়ের স্থান থাকে এবং সেখানে যথাযথভাবে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে, রুকু করে ও সিজদা করে সালাত আদায় করা সম্ভব হয় তবে তাকে সেভাবেই সালাত আদায় করতে হবে, যদি তাতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়।
সংকলন: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
সূত্র: ইসলামহাউজ

No comments:

Post a Comment